অখণ্ড ভারত কত বড় ছিল?
যারা বলেন ভারত তেরে টুকড়ে হোঙ্গে, কিংবা যারা বলেন চাই অখণ্ড ভারত – এমন
দাবী করা লোকের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু কজনই বা জানে আজ পর্জন্ত ভারত কত টিকরো হয়েছে?
কিংবা প্রাচীন অখণ্ড ভারত ঠিক কতটা বড়!
আসুন এই ভিডিওতে আমরা সেটাই খুঁজে দেখার চেষ্টা করি।
প্রথমে দেখে নিই প্রাচীন ভারত বর্ষের সীমানা কেমন ছিল।
হিন্দু পুরাণ, বায়ু প্ররাণ প্রভৃতিতে বলা
হয়েছে –
उत्तरं यत् समुद्रस्य, हिमाद्रश्चैव दक्षिणम्।
वर्ष तद् भारतं नाम, भारती यत्र संतति।।
অর্থাৎ ভারত মহাসাগরের উত্তরে এবং হিমালয়
পর্বতমালার দক্ষিণে অবস্থিত ভূমিকে ভারত বলা হয় যারা ভারতকে হিন্দুস্তান হিসেবে চেনে –
তাদের জন্য
বৃহস্পতি আগম গ্রন্থে বলা হয়েছে –
हिमालयं समारम्भ्य यावद् इन्दु सरोवरम।
तं देव निर्मित देशं, हिन्दुस्थानं प्रचक्षते।।
হিমালয় থেকে ইন্দু মহাসাগর পর্যন্ত দেবতাদের
তৈরি এই ভূভাগকে
বলা হয় হিন্দুস্তান। অর্থাৎ ভারতবর্ষ ও
হিন্দুস্তান একই দেশের নাম।
এতো গেল উত্তর দক্ষিনের কথা। প্রাচীন ভারত
পূর্ব পশ্চিমে কতদূর বিস্তৃত ছিল?
হিমালয়ের কেন্দ্রস্থল 'কৈলাস
মানসরোবর' থেকে পূর্ব দিকে গেলে ইন্দোনেশিয়া হিমালয়
শেষ হচ্ছে। এবং পশ্চিম
দিকে ইরান হিমালয়ের শেষ প্রান্ত। অনেকে বলবেন ইরানে যে পুর্বতমালা আছে আর
নাম তো হিন্দুকুষ। খেয়াল করে দেখুন এই
হিন্দুকুষ শব্দের মধ্যেই হিন্দু শব্দটি
লুকিয়ে আছে।
প্রায় 5000টি পর্বতশ্রেণী এবং 6000টি নদী ধারণ করা হিমালয় পূর্ব পশ্চিমে সমুদ্রে গিয়েই মিশেছে। আর
সেই সমুদ্রের নাম ভারত মহাসাগর। একইভাবে শ্রীলঙ্কা বা কন্যাকুমারী থেকে পূর্ব ও পশ্চিম দিকে বা ভারতীয় মহাসাগরের দিকে তাকালে
পূর্বে ইন্দোনেশিয়া এবং পশ্চিমে ইরান।
এর পরেই দুই দিকে
সমুদ্রের নাম বদলে যায়।
এইভাবে, হিমালয়, ভারত মহাসাগর, ইরান এবং ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবর্তী
সমগ্র ভূমি এলাকাকে আর্যাবর্ত বা ভারতবর্ষ বা হিন্দুস্থান বলা হয়।
https://www.youtube.com/watch?v=mFiPqQ0hDak
ইরাণঃ ইরান
শব্দটি সংস্কৃত শন্দ আর্য্য থেকে এসেছে। আর্য্য > আরইয়ান > ইরান। যার অর্থ
আর্য্যদের ভূমি।
আফগানিস্তান :- উপ গণ স্থান থেকে আফ গানিস্তান শব্দটির
জন্ম। শিবের উপাশকদের বলা হয় গণ। শিব তাঁর
উপাশকদের নেতা হিসেবা তাঁর পুত্রকে নির্বাচণ করেছিলেন বলে তাঁর সন্তানের নাম গণ +
ঈশ > গণেশ। একানে ঈশ শব্দের অর্থ দলের অধিপতি বা নেতা। গণ নামের উপাশকরা যে
স্থানে বসবাস করে তার নাম উপগণস্থান > আফগানিস্তান। 1876 সালে, রাশিয়ান এবং ব্রিটিশ শাসক গন্ডামক চুক্তির মাধ্যমে আফগানিস্তান
নাম গিয়ে ভারত থেকে আলাদা করে দেয়।
নেপাল :- ইতিহাস
বলছে নেপালে ভারতের মৌর্য্য
সাম্রাজ্য, গুপ্ত
সাম্রাজ্য, এমনকি চালুক্য সাম্রাজ্যও ছিল।
ভুটান :- ভুটান শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ
"ভূ-উত্থান" থেকে যার অর্থ "উঁচু ভূমি"।
১৭০২
সাল নাগাদ ভুটান আলাদা দেশ হয়ে যায়।
তিব্বত :- 1914 সালে,
চীনা এবং ব্রিটিশ চুক্তি করে তিব্বতকে
ভারত ও চিনের মধ্যে একটি বাফার রাষ্ট হিসেবে আলাদা করে দেয়। যা এখন চীনের দখলে।
চীনঃ 1962 সালের অক্টোবরে,
চীন ভারত আক্রমণ করে এবং হাজার হাজার বর্গকিলোমিটার দখল করে। আকসাই
চিন (লাদাখ অর্থাৎ জম্মু-কাশ্মীর) এবং অরুণাচল প্রদেশের বেশ কিছু অংশ দখল কেরে নেয়।
শ্রীলঙ্কা :- ব্রিটিশরা শ্রীলঙ্কা 1965 সালে
শ্রীলঙ্কাকে আলাদা করে দেয়।
মায়ানমার:- মায়ানমারকেও ভারত থেকে আলাদা করে দেওয়া হয় 1937। যার আগে নাম ছিল
পাকিস্তান ও বাংলাদেশ :- পাকিস্তান ও বাংল্কাদেশের কথাতো আমরা সবাই
জানি। ধর্মের আফিম খাইয়ে কিভাবে খুব সহজেই একটা জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া যায় তার
শ্রেষ্ঠ উদাহরণ পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।
মালদ্বীপ:- ভারতের দক্ষিণে সুদূর সমুদ্রে মালদ্বীপ
আসলে
ছোট ছোট এক গুচ্ছ দ্বীপ। এটিও ভারতের অংশ ছিল। কোনো আন্দোলন ও দাবি
ছাড়াই তাকে ভারত থেকে আলাদা করে দেওয়া হয় ১৯৪৭ সালেই।
জাভাঃ প্রাচীন কালে জাভা হিন্দু রাজাদের অধীনে ছিল। এখনো অনেক হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দির এবং তাদের
অবশিষ্টাংশ এখানে দেখা যায়। ম্যাগিলং এর কাছাকাছি 'বরোবুদুর' মন্দির পৃথিবীর বৃহত্তম বৌদ্ধ মন্দির।
সুমাত্রাঃ সুমাত্রা ছিল বিখ্যাত
শ্রীবিজয় সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু।
থাইল্যাণ্ডঃ এখানে ভারতীয়
সংস্কৃতি এতটাই গভীর যে এরা নিজেদের রামের বংশধর মনে করেন।
ভিয়াতনামঃ ভিয়েতনাম
একট হিন্দু রাজ্য ছিলা যার রাজধানীর নাম ছিল চম্পা। বায়ুপুরাণে
এর উল্লেখ পাওয়া যায়।
কম্বোডিয়াঃ কম্বোডিয়ার
প্রাচীন নাম ছিল কম্বুজ। এ ছিল ভারতের
বাইরে আরেকটা ভারত। আঙ্কোরভাট বিষ্ণুমন্দির পৃথিবীর
সবথেকে বড় বিষ্ণু
মালেশিয়াঃ রামায়ণে সুবর্ণদ্বীপের
কথা আছে তা এই মালয়েশিয়া। প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ বায়ু পুরাণ- এ মালয়দ্বীপ নামে একটি স্থানের উল্লেখ করেছে যেখানে সোনার পাওয়া
যেত। এখানেও এক সময় চোল সাম্রাজ্য ও বিজয় সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল।
কোন কিছু ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলা অনেক
সহজ। অনেক কঠিন গড়ে তোলা। তার থেকেও কঠিন গড়ে তোলা জিনিসকে ধরে রাখা। তারও থেকে
বহুগুণ কঠিন ভেঙে যাওয়াকে নতুন করে জোড়া লাগিয়ে আবার গড়ে তোলা।
ভারতকি পারবে তার পুরণো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে
আনতে? আপনার মতামত লিখুন কমেণ্ডবক্সে। ভালো লাগলে লাইক করুন শেয়ার করুন। কারন যা
ভালোলাগে তা শেয়ার করলে আরো ভালো লাগে। সাবস্ক্রাইব করেছেন তো ? অনেক অনেক অনেক
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবাই।
Comments
Post a Comment