একটি সুন্দর মাতৃ জঠর

आयुः कर्म वित्तं विद्या निधनमेव

पञ्चैतानि हि सृज्यन्ते गर्भस्थस्यैव देहिनः ०४-०१ চাণক্য নীতি

আয়ুঃ কর্ম চ বিত্তং চ বিদ্যা নিধনমেব চ ।

পঞ্চৈতানি হি সৃজ্যন্তে গর্ভস্থস্যৈব দেহিনঃ ॥ ০৪-০১ চাণক্যনীতি

 

কথিত আছে জন্ম মৃত্যু বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে। অর্থাৎ একটি মানুষের জন্ম মৃত্যু ও বিবাহ কবে কিভাবে হবে তা ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর – এই তিন বিধাতার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। কিন্তু মহামতি চানোক্য আরো তিক্ষ্ণ বিচার করে বলছেন

মানুষটির আয়ু কতদিন হবে, মানুষটি জীবনে কী কী কর্ম্ম করবে, কত সম্পদের অধিকারী হবে, কতটা বিদ্যান হবে এমনকি কবে মারা যাবে – এই সব কিছুই মায়ের গর্ভে থাকা কালীন নিশ্চিত হয়ে যায়।

অর্থাৎ মা এবং মাতৃ গর্ভ-ই একটি সন্তানের ইহকাল ও পরকালের আঁতুর ঘর।

মা যদি সৎ চরিত্রের হয় হয় সন্তান সৎ হবেই। মা যদি দয়ালু হয় সন্তান দয়ালু হবেই। মা যদি ধার্মিক হয় সন্তান ধার্মিক হবেই।

রাবনের বাবা ঋষি বিশ্ৰবা আর মা রাক্ষস কন্যা কাইকেশী।

রাবন রাবন হয়েছে তার মা কাইকেশীর কারনে। রাবনের পিতা বিশ্রবা একজন ঋষি ছিলেন। তবুও রাবণ ঋষি হতে পারেনি। রাবনের ম ছিলেন অসুর রাজা সুমালির কন্যা।

 

ধ্রব ধ্রুব হতে পেরেছিল পিতা উত্থান পাদের জন্য নয়। মাতা সুনীতির জন্য। যে মা সু নীতির অধিকারী তার সন্তান ধ্রুবের মতো নীতিপরায়ন হবেই।

 

বুদ্ধের পিতা শত চেষ্টা করেও তাকে রাজ্যের রাজা বানাতে পারেনি। কারন তার মা ছিলেন মায়াদেবী। তাই রাজ্যের মোহ ত্যাগ করে গৌতম বুদ্ধ জগত সংসারকে মায়া মুক্তির পথ দেখিয়েছে।

 

এরকম লাখো লাখো উদাহরন দেওয়া যায়।

 

সুতরাং সন্তানকে সুন্দর করতে হলে সুন্দর হতে হবে মাকে। একটা সমাজ সুন্দর মা তখনই পেতে পারে যখন আমরা প্রত্যেকে কন্যা সন্তানকে সুন্দর করে মানুষ তুলতে পারব।

সন্তান – সে কন্যা হোক বা পুত্র তখনি সুন্দর হবে যখন তার বিচরণ ভূমিকে, - এই মাটিকে, - এই পরিবেশকে আমরা সুন্দর করতে পারব। এই পরিবেশ – এই মাটি-জল নদী- এও এক মা। আমাদের সন্তানদের – দ্বিতীয় মা।

এক মাতৃ জঠর থেকে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় – আসলে দ্বিতীয় মাত্ররু জঠরে প্রবেশ করে।

 

তাই সবার আগে দরকার পরিবেশকে সুন্দর করা।

 

একটা পরিবেশ তখনই সুন্দর হবে – যখন আমরা প্রত্যেকে সুন্দর হতে পারব। প্রত্যাকে মানে প্রত্যেকেই। শুরু করতে হবে নিজেকে দিয়ে।

স্বামী বিবেকানন্দ একটা সুন্দর কথা বলেছিলেন – যে কাজ সবাই করলে তুমি মনে কর এই পৃথিবী স্বররগ হয়ে যাবে, সেই কাজ তুমি করতে শুরু কর। সেটাই সুন্দর কাজ। তাতে আর কেউ স্বররগে বিচরণ করুক বা না করুক তুমি স্বর্গে বিচরণ করবে। এই জীবনেই। তুমি স্বর্গীয় সুখ অনুভব করবেই। এই জীবনেই। 

 

আসুন নিজেকে সুন্দর করি। বাইরের কস্টিউম দিয়ে নয়। ভিতর থেকে। অন্তর থেকে সুন্দর হয়ে উঠি।

মনে কোন নোংরা চিন্তা নয়, মুখে কোন নোংরা কথা নয়, কর্মে কোন নোংরা নয় – ফাঁকি নয় । তাহলেই সুন্দর হবে তুমি। সুন্দর হবে জগত। সুন্দর হবে আগামী প্রজন্মের মাতৃ জঠর। সুন্দর হবে আগামী প্রজন্ম। 

Comments

Popular posts from this blog

অখণ্ড ভারত কত বড় ছিল?

শিবরাত্রি কেন পালন করা হয়?